১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বিশ্বজনীন মানবাধিকারের একটি সাধাারণ ঘোষনাপত্র প্রনয়ন করে। উক্ত ঘোষণাপত্রে ২৫টি মানবাধিকারের কথা হয়েছে, সব অধিকারসমূহই “মানবাধিকার” নামে আখ্যায়িত হয়। এ ২৫টি অধিকারের মধ্যে ১৯টি হলো পৌর ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত, আর বাকি ৬টি হলো অর্থনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার (Economic, social and cultural Rights) সম্পর্কিত।
মানবাধিকারের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে মনে হয়, নাগরিক অধিকার বলতে এসব অধিকারকে বুঝায়, যা মানবাধিকারের অন্তর্ভূক্ত নয়। যেমন-বানিজ্য করার অধিকার, কোম্পানি গঠন করার অধিকার, বীমা করার অধিকার এগুলো মানবাধিকার নয়। বরং নাগরিক অধিকার। কেননা মানবাধিকারের মেধ্য যে প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য রয়েছে সেগুলো সবই মানবাধিকারের তত্ত্বগত দিক, বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ বাস্তবে মানবাধিকার সর্বত্রই লঙ্গিত হচ্ছে, অনেক মানবাধিকার সরকার ছিনিয়ে নিতে পারে, যেমন জাতীয়তার অধিকার, সম্পত্তির অধিকার ইত্যাদি। আসল কথা হচ্ছে “মানবাধিকার” কোনো আইনগত ধারনা নয়, বরঞ্চ এটি একটি আন্তর্জাতিক আইনের বিষয় বটে। তাই কোনো মানবাধিকারকে যখন দেশের সংবিধানে বা positive আইনে স্বীকৃতি দিয়ে বলবৎকরণের ব্যবস্থা করা হয়, তখনই মানবাধিকার আইনগত অধিকারে পরিনত হয়। যে কারনে মানবাধিকারকে প্রকৃত অর্থে সার্বজনীন নৈতিক অধিকার (Universal moral Right) বলা সঙ্গত হয়।
উপর্যুক্ত আলোচনাক্রমে মানবাদিকারের প্রধানত নিম্নোক্ত ২টি বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়, যথা-
১। সার্বজনীন সহজাততা (Universal inference)
২। অহস্তান্তরযোগ্যতা (Inalienability)
বিশেষত উক্ত দুই প্রধান বৈশিষ্ট্যের কারণে মানবাধিকার অন্যান্য অধিকার থেকে অনেক পৃথক প্রকৃতির হয়ে থাকে। সার্বজনীন সহজাততা বলতে বুঝায় যে, কোনো ব্যক্তি জন্নগ্রহণ করা মাত্র যেসব অধিকারগুলো দাবি করতে পারে। অহস্তান্তরযোগ্যতা বলতে এটিই বুঝায়, যেসব অধিকারগুলোকে কেউ ছিনিয়ে নিতে পারে না। এ অর্থে মানবাধিকাগেুলো নাগরিক অধিকার থেকে পৃথক প্রকৃতির হয়। যদিও নাগরিক অধিকারগুলো দেশের positive law দ্বারা স্বীকৃত, আর রাষ্ট্র এগুলোকে ছিনিয়ে নিতে পারে। কিন্তু মানবাধিকারগুলো রাষ্ট্র জন্মলাভ করার পূর্ব থেকেই বিরাজ করে বিধায় এগুলোকে ছিনিয়ে নেওয়f অসম্ভব (Human rights are rights that existed before the state came into being and for this reason, they are natural and inalienable rights)
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ আবশ্যক যে, যে কোনো দেশের সংবিধানে স্বীকৃত এবং আদালতের মাধ্যমে বলবৎকর ও কার্যকরযোগ্য অধিকারসমূহকে “মৌলিক অধিকার” বলে। প্রকৃত অর্থে সব মৌলিক অীধকারই মানবাধিকার। তাই মানবাদিকারের অন্তর্গত যেসব অধিকার সংবিধানে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে এবং সাংবিধানিক নিশ্চয়তা দ্বারা সংরক্ষণ করা হয় তাই মৌলিক অধিকার।
কাজেই আমরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, মানবাধিকার বলতে মানুষের যে কোনো অধিকারকে বুঝায়না, বরহঞ্চ মানবাধিকার শব্দটি বিশেষ অর্থে ্যবহৃত হয়। আইনগত ও নৈতিক অধিকারগুলোর মধ্যে সেগুলোই মানবাধিকার যেগুলো পৃথিবীর সব মানুষ শুধু মানুষ হিসে দাবি করতে পারে।এ অধিকারগুলৈা কোনো দেশ বা কালের সীমানায় আবন্ধ নয়, এগুলো চিরন্তন এবং সার্বজনীন। পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষ প্রকৃতিগতভাবে এ অধিকারগুলৈা নিয়েই জন্মগ্রহণ করে থাকে। এভাবে নাগরিক অদিকারের পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করতে গিয়ে এ.ভী ডাইসী বলেন, “Judicial decisions determining the rights of private persons in particular cases brought before courts, under many foreign constitutions the security …. given to the rights of individuals results or appears to result from the general principles of the constitution.
আরো পড়ুন- মানবাধিকারের সংঙ্গা ও ধারণা