পর্চা দেখে জমির হিস্যা কীভাবে বের করবেন – ধাপে ধাপে নির্দেশনা

পর্চা দেখে জমির হিস্যা কীভাবে বের করবেন

বাংলাদেশে জমি সংক্রান্ত অধিকাংশ আইনি ও ব্যাবহারিক বিষয় বুঝতে হলে “পর্চা” বা খতিয়ান খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি দলিল। অনেকেই জানেন না কিভাবে পর্চা দেখে জমির নিজেদের হিস্যা (অংশ) নির্ধারণ করতে হয়। এখানে ধাপে ধাপে এটি বোঝানো হলো। যা দেখে আপনি নিজে নিজে আপনার বা আপনার পরিবারের সম্পদের হিসাব বের করতে পারবেন বলে আশা রাখি।

সর্বপ্রথম আপনাকে কিছু সূত্র মুখস্ত রাখতে হবে বা জানতে হবে। এগুলি ছাড়া আপনি সঠিক হিসাব বের করতে পারবেন না। সেটি হচ্ছে আনা, গন্ডা, কড়া, ক্রান্তি, তিল এটি বুঝতে হবে। তবে বর্তমানে যে হিসাব গুলি রয়েছে এটি হাজার পদ্ধতি বা অযুতাংশ পদ্ধতি। আনা, গন্ডা, কড়া, তিল বা খতিয়ানের হিস্যা সম্পর্কে জানুন খুব সহজে :: আনা, গন্ডা, কড়া, ক্রান্তি ও তিল এর ব্যবহার:-
বাংলাদেশ আমলের পূর্বের সময়ে প্রস্তুতকৃত খতিয়ানসমূহ যথা- সি,এস ও এস, এ খতিয়ানে একাধিক ভূমি মালিকের নাম থাকলে খতিয়ানে মোট জমিতে কোন মালিকের কতটুকু হিস্যা বা অংশ আছে তা আনা, গন্ডা, কড়া, ক্রান্তি ও তিল চিহ্ন দ্বারা প্রকাশ করা হতো।

ধাপ-০১। খতিয়ানের মোট জমিকে ১৬ আনা ধরা হয়। আনার চিহ্ন নিম্নরূপ-
⁄ = ১ আনা
৵ = ২ আনা
৶ = ৩ আনা
৷ = ৪ আনা
৷⁄ = ৫ আনা
৷৵ = ৬ আনা
৷৶ = ৭ আনা
৷৷. = ৮ আনা
৷৷⁄ = ৯ আনা
৷৷৵ = ১০ আনা
৷৷৶ = ১১ আনা
৸ = ১২ আনা
৸ ⁄ = ১৩ আনা
৸৵ = ১৪ আনা
৸৶ = ১৫ আনা
১্= ১৬ আনা।

ধাপ-০২। গণ্ডাকে ১, ২, ৩, ৪…. এভাবে প্রকাশ করা হয়।
১ = ১ গণ্ডা
২ = ২ গণ্ডা
৩ = ৩ গণ্ডা
৪ = ৪ গণ্ডা
৫ = ৫ গণ্ডা
৬ = ৬ গণ্ডা
৭ = ৭ গণ্ডা
৮ = ৮ গণ্ডা
৯ = ৯ গণ্ডা
১০ = ১০ গণ্ডা
১১ = ১১ গণ্ডা
১২ = ১২ গণ্ডা
১৩ = ১৩ গণ্ডা
১৪ = ১৪ গণ্ডা
১৫ = ১৫ গণ্ডা
১৬ = ১৬ গণ্ডা
১৭ = ১৭ গণ্ডা
১৮ = ১৮ গণ্ডা
১৯ = ১৯ গণ্ডা
*২০ গন্ডায় ১ আনা।

আনা, গন্ডা, কড়া, ক্রান্তি, তিল এর সঠিক লেখন পদ্ধতি প্রকাশ করা হল:

এই তথ্যটি সিভিল ল ফাউন্ডেশন হতে সংগ্রহ করা হয়েছে। (অ্যাডভোকেট জিয়াউর রহমান (স্যার))

ধাপ ৩: পর্চার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বুঝে নিন

একটি পর্চায় নিচের তথ্যগুলো থাকে:

  • খতিয়ান নম্বর : আমাদের দেশে যে জরিপ হয়েছে তার নাম উল্লেখ থাকবে বা চিনতে হবে যে কোন খতিয়ানের জমি রয়েছে।
  • দাগ নম্বর: প্রতিটি খতিয়ানে দাগ নাম্বার দেওয়া থাকবে। আর না হয় কোথায় জমি আছে সেটি বুঝা যাবে না।
  • জমির মোট পরিমাণ (একরে, শতকে, বিঘায় বা কাঠায়) কোন এককে জমি আছে সেটি বুজতে হবে।
  • মালিক/উত্তরাধিকারীর নাম: ঐ জমির মালিক কত জন তাহা উল্লেখ থাকবে এবং তিনি কতটুকু অংশ পাবে তা উল্লেখ থাকবে।
  • মালিকের অংশ (চিহৃ দেওয়া থাকবে: ৮ আনা, ৫ গন্ডা, ৩ কড়া, ২ক্রান্তি, ১০ তিল) ইত্যাদি যে কোন অংশ উল্লেখ থাকবে।

ধাপ-৪: জমির অংশ স্কয়ার ফিটে কীভাবে বের করবো?

দৈর্ঘ্য * প্রস্ত= ক্ষেত্রফল

যেই ফলাফল বের হবে সেটি স্কয়ার ফিট আকারে বের হবে।
এখন আপনি যা জানতে চান: যেমন: কত শতাংশ, কত কাঠা ইত্যাদি

১ শতক = ৪৩৫.৬ স্কয়ার ফিট (যদি আপনি শতাংশ বের করতে চান তাহলে ৪৩৫.৬০ দিয়ে ভাগ করতে হবে)
⇒ ৫ শতক = ৫ × ৪৩৫.৬ = ২,১৭৮ বর্গফুট

জমি জমার হিসাব সহজে পেতে চাইলে আপনি ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারেন। জমি জমার হিসাবে ক্লিক করুন

জমি ভাগবাঁটোয়ারা না হলে আমি কোন অংশে মালিক?

উত্তর: আপনি মোট অংশের মালিক, কিন্তু নির্দিষ্ট দাগ বা সীমানা নির্ধারিত না থাকলে সেটি ভাগ হয়নি বলে গণ্য হবে।

পর্চা সম্পর্কে জানতে: পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *