দলিলপত্রে বহুল ব্যবহৃত কিছু শব্দের পূর্ণরুপ পর্ব (১)

মোট: ১০৭ টি শব্দের র্পূণরুপ ব্যাখ্যা করা হয়েছে। দলিলপত্র এই ধরনের সংক্ষিপ্ত শব্দের বহু ব্যবহার রয়েছে। পর্ব -১ থাকবে (১-৫০) পর্যন্ত।দলিলপত্রের বাকি শব্দের পূর্ণরুপ বা ব্যাখ্যা থাকবে পর্ব-০২ এ।

১। গং: অন্যরা সমূহ। তুমক {ব্যক্তিনামা} ও অন্যান্য বা তার সহযোগীগণ।
২। সাং: সাকিন, সাকিম শব্দের অর্থ ঠিকানা বা বাসস্থান।
৩। দং: দরুন, বাবদ, দখল।
৪। কিঃ কিস্তি। কিন্তু শব্দটি দফা, বার, ক্ষেপ এই অর্থে ব্যবহৃত হয়।
৫।মোং: মোকাম এর অর্থ আবাস, বাসস্থান হলেও মুলত বানিজ্য স্থান।
৬। এজমালি/ ইজমালি: যৌথ, সংযু্ক্ত, বহুজনের একত্রে। যেমন: এজমালী সম্পত্তি বলতে যৌথ মালিকাধীন সম্পত্তিকে বোঝায়।
৭। কিত্তা/ কিতা: আরবি “ক্বত্বহ” শব্দজাত এর অর্থ অংশ, জমির ভাগ, পদ্ধতি।
৮। ছানি: আরবি শব্দ অর্থ দ্বিতীয় বার। পুনবিবেচনার প্রার্থনা। যেমন: ছানি মামলা।
৯। নিম: ফারসি শব্দ। এর অর্থ অল্প, অর্ধেক, অধস্তন বা অধীন ইত্যাদি।
১০। ছোলেনামা: মীমাংসা, আপোষ/আপস। ছোলেনাম মানে আপোস-মীমাসংসাপত্র।
১১। জঃ জমা। সাধারণ অর্থে জমা বলতে সঞ্চিত, রাখীকৃত ।
১২। নং: নম্বর বা সংখ্যা অর্থে বোঝানো হয়।
১৩। পঃ পঞ্চম বা পাঁচের স্থানীয় ভাষ্য।
১৪। পোঃ পোস্ট অফিস বা ডাকঘর বোঝানো হয়।
১৫। মহঃ মহকুমা। ব্রিটিশ আমলে জেলার একটি প্রশাসনিক অংশকেই মহকুমা বলা হতো।
১৬। মুসাবিদা: খসড়া তৈরি করা। মুসাবিদাকরক মানে আইনজীবী বা দলিল লেখক । তবে একজন আইনজীবী সর্বচ্চো মুসাবিদাকরক তিনি বাংলাদেশের যে কোন দলিল রেজিষ্ট্রেশন অফিসে দলিল রেজিশ্ট্রেশন করার জন্য মুসাবিদাকারক হিসাবে নাম সিল ব্যবহার করতে পারবেন।
১৭। হিঃ হিসাব শব্দের সংক্ষিপ্ত রুপ।
১৮। চৌঃ চৌহদ্দি। চৌহদ্দি শব্দের অর্থ হচ্ছে চারধারের সীমানা।
১৯।তাঃ/ তফ: তফসিল, তহশিল।
২০।তামাদি ফারসি শব্দ। এর অর্থ নির্ধারিত সময়সীমা।
২১। বিতং: বিস্তারিত বিবরণ, কৈফিয়ত, বৃত্তান্ত অর্থে ব্যবর্হত হয়।
২২। মাং/মাঃ: মারফত। মারফত মানে মাধ্যম, অর্থ্যাৎ যার হাত দিয়ে বা মাধ্যমে আদান প্রদান করা হয়।
২৩।সহঃ সহকারী, যিনি কাজে সহযোগিতা করেন।
২৪। সুদিখত: এক শ্রেণীর বন্ধকী দলিল।
২৫। তমঃ তমসুক। আরবি শব্দজাত, যার অর্থ দলিল, ঋণ-স্বীকারপত্র বা খত। অর্থ্যাৎ কর্জ গ্রহীতা যে লিখিত পত্র, বিশেষত সরকারি স্ট্যাম্প বা কাগজমুলে কর্জদাতার কাছে থেকে টাকা ধার নেয়। বন্ধকী বা বন্ধকী খত।


২৬। হলফ: সত্য বলার জন্য যে শপথ করা হয়। হলফকারী মানে যিনি সত্যায়ন করেন।
২৭। খারিজ: সাধারণ অর্থে বাতিল করা হয়েছে এমন বোঝায়। ভূমি আইনের একজনের নাম থেকে অন্যজনের নামে জমির মালিকানা পরিবর্তন করে নেওয়াকে বোঝায়।
২৮। মৌরাশি: পুরুষানুক্রমে কোন ভূমি ভোগ দখল করাকে মৌরাশি বলে।
২৯। বায়া (Vender) দলিল: বিক্রেতা, বিক্রেতার সম্পাদিত দলিলকে বলে বায়া দলিল।
৩০। তফসিল: কোন জমি যে মৌজায় অবস্থিত সে মৌজার নাম, জে.এল.নং, খতিয়ান নং, দাগ নং, জমির শ্রেণী, পরিমান, জমির চৌহদ্দির বর্ণনা ইত্যাদি পরিচিত সম্মলিত বিবরণকে ঐ জমির তফসিল বলে।
৩১। মিনাহ (Deduction): কম, কমতি, জমি সিকস্তি হলে তার কর আদায় স্থগিত করাকে মিনাহ বলে।
৩২। সায়রাত মহাল: যে ভূমির জন্য ডিসিআর প্রদেয় তা সায়রাত মহাল। যেমন-বাজার, ঘাট, জলমহাল, বালুমহাল ইত্যাদি।
৩৩। ডহর বা দহর: পথ।
৩৪। খানে খোদাঃ মসজিদ।
৩৫। ইয়াদস্ত: স্মারক লিপি।
৩৬। ইস্তমুরার: যে প্রজা চিরস্থায়ী জমি বন্দোবস্ত নিয়েছে।
৩৭।কোর্ট অব ওয়ার্ড: যে বিভাগ নাবালকের বিষয় পর্যালোচনা করেন।
৩৮। লব্ধ: রবিশস্য।
৩৯।খাস মহল: রাজার নিজ তত্ত্বধানে চালিত যে মহল।
৪০। সিল জমি: আবাদযোগ্য পতিত জমি।
৪১। নোনাবাড়ী: বসতভিটি।
৪২। মোদকস্ত রায়তরা: যে প্রজা নিজ গ্রামে বা করে সেই গ্রামে জমি চাষ করে।
৪৩। খাস মোমা: নিজস্ব দলিলের জমি।
৪৪। প্রাইকবুরায়ত: যে প্রজা নিজ গ্রামে বাস করে সেই গ্রামে জমি চাষ করে।
৪৫। চক: জমিদারির অংশ বিশেষ।
৪৬। চকবন্দী: একই সংলগ্ন কতগুলি দাগ।
৪৭। চাহারন: যে জমিতে চার আনা শস্য উৎপন্ন হয়।
৪৮। সূয়েম জমি: যে জমিতে ৮ আনা শস্য উৎপন্ন হয়।
৪৯। দুইয়েস জমি: যে জমিতে ১২ আনা শস্য উৎপন্ন হয়।
৫০। চিটা: যে কাগজে জমির পরিমান বিস্তারিত লেখা থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *