শাস্তি কাকে বলে? শাস্তির উদ্দেশ্য কি? শাস্তির প্রকারভেদ বা বিভিন্ন প্রকার শাস্তির আলোচনা বা বাংলাদেশে প্রচলিত শাস্তি কি? শাস্তির ধরন কি কি?

শাস্তি কাকে বলে? শাস্তির উদ্দেশ্য কি? শাস্তির প্রকারভেদ বা বিভিন্ন প্রকার শাস্তির আলোচনা বা বাংলাদেশে প্রচলিত শাস্তি কি? শাস্তির ধরন কি কি?

শাস্তি কাকে বলে? শাস্তির উদ্দেশ্য কি? শাস্তির প্রকারভেদ বা বিভিন্ন প্রকার শাস্তির আলোচনা বা বাংলাদেশে প্রচলিত শাস্তি কি? শাস্তির ধরন কি কি?

শাস্তির সংজ্ঞা :

শাব্দিক অর্থে “শাস্তি” বলতে কৃত অপরাধের জন্য অপরাধীকে কষ্ট দেয়া বুঝায়। এ কষ্ট অবশ্য শারীরিক বা মানসিক বা উভয় প্রকার হতে পারে। সামাজিক শৃঙ্ঘলা ও মানুসের জান, মালের নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে আইন-কানুন তৈরী করে অপরাধীকে কষ্টদিয়ে কিংবা মানুষের জন-মালের ক্ষতিসাধন করলে সে অপরাধী এবং তার কৃত কর্মের জন্য দায়ী হয়ে তাকে শাস্তি নিতে হবে। কোন অন্যায়কারীকে তার অন্যায় কাজের জন্য যেই পীড়ন দেয়া হয় তাকেই শাস্তি বলে। অর্থাৎ কোন অপরাধীকে তার অপরাধের জন্য শারীরিক বা মানসিক যে যাতনা দেয়া হয় তাকে (Punishment) শাস্তি বলে। কোন অপরাধকে পীড়ন বা যাতনা দেওয়ার দায়িত্ব সরকার বা রাষ্ট্রের।

শাস্তির উদ্দেশ্য (Purpose of punishment) :

আইনে নিষিদ্ধ কোন কাজ সম্পাদন করলে যেমন অন্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়, আবার আইনে যে কাজ করতে বলা হচ্ছে সেই কাজ করা থেকে বিরত থাকলেও অন্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়। কোন অপরাধীকে কষ্ট দেয়া শাস্তির মূল উদ্দেশ্য নয়। যে অন্যায় কাজ করবে তার প্রায়শ্চিত্য হওয়া প্রয়োজন। শাস্তির ভোগের মাধ্যমে অন্যায়কারীকে প্রায়শ্চিত্য করতে হয়। শাস্তি প্রদান না করলে সমাজে, রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে। শাস্তি প্রদানের মূল উদ্দেশ্য হলো অপরাধকে নির্মূল করা বা নিয়ন্ত্রণে রাখা পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের প্রতিকার প্রদান করা হয়।

শাস্তির প্রকারভেদ বা বিভিন্ন প্রকার শাস্তির আলোচনা বা বাংলাদেশে প্রচলিত শান্তি :

নিম্নে বাংলাদেশে প্রচলিত শাস্তি উল্লেখ করা হলোঃ ১৮৬০ সালের দন্ডবিধির ৫৩ দারা অনুযায়ী বাংলাদেশে ৫ ধরনের শাস্তির প্রচলিত আছে। যথা: –

১) মৃত্যুদন্ড: দন্ডবিধি অনুযায়ী বাংলাদেশে ১০টি ক্ষেত্রে মৃত্যুদন্ডের বিধান রয়েছে। বাংলাদেশে সাধারণ ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। যতক্ষণ উক্ত ব্যক্তির মৃত্যু না হবে ততক্ষণ তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখতে হয়।

২) যাবজ্জীবন কারাদন্ড: যাবজ্জীবন কারাদন্ড অবশ্যই সশ্রম হবে।

৩) কারাদন্ড: কারাদন্ড সশ্রম হতে পারে আবার বিনাশ্রমও হতে পারে।

৪) সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করণ: আদালত প্রয়োজন মনে করলে অপরাধীর সম্পত্তি বাজেয়া্পত করণের নির্দেশ দিতে পারেন।

৫) জরিমানা: বিভিন্ন অপরাদের জন্য আদালত অপরাধীকে জরিমানা করতে পারেন।

শাস্তির ধরণ (Kinds of Punishment)

অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনা করে শাস্তির মাত্রা, ধরন এবং প্রকৃতিও নির্ধারিত হয়। এসকল শস্তির মধ্যে অনেকগুলো বন্য, অসভ্য, বর্বর ও হিংস্র ধরনের হয়ে থাকে। যদিও প্রায়োগিক পদ্ধতি ও মাত্রার প্রেক্ষিতে এগুলোর মধ্যে কিছুটা পার্থক্য বিদ্যমান। নিম্নে প্রচলিত কতিপয় ধরনের দন্ডের বর্ণনা প্রদান করা হল।

১) মৃত্যুদন্ড (Capital Punishment): শাস্তির ধরণের মধ্যে মৃত্যুদন্ড হচ্ছে সর্বোচ্চ এবং চরমতম শাস্তি। প্রাচীনকালেও মৃত্যুদন্ড বিভিন্ন সমাজে বিভিন্ন রূপে প্রচলিত ছিল। অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ, তেলে সিদ্ধ করা, চাকা দ্বারা পিষ্ট করা, পানিতে নিক্ষেপ, শুলে চড়ানো ইত্যাদি পদ্ধতিতে এ ধরনের দন্ড কার্যকর করতে দেখা যায়। তবে বর্তমানে এই মৃত্যুদন্ড রায় অনেক দেশ অকার্যকর করেছে। প্রলম্বিত নির্যাতন এবং মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার দীর্ঘ সময় ও পদ্ধতি বাদ দেয়া হচ্ছে এবং মৃত্যুদন্ড দ্রুত ও কম যন্ত্রনাদায়ক করা হচ্ছে।

২) অঙ্গচ্ছেদ (Punishment as cutting off a limb): প্রাচীনকালে অঙ্গচ্ছেদ করে শাস্তি প্রদান করা হত। চুরির অপরাধে ভারতবর্ষে হাত কাটার রেওয়অজ প্রচলিত ছিল। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে হাতকাটাসহ জনসমক্ষে পাথর নিক্ষেপের মত বর্বর শাস্তির প্রচলিত রয়েছে। এ প্রকার শাস্তি নির্মম বলে তা পরিত্যাজ্য হচ্ছে।

৩) শরীরে ছাপ প্রদান (Corporal Punishment): লৌহ পুড়িয়ে অপরাধীর গায়ে ছাপ দেয়ার রীতি রোম, ইংল্যান্ড, আমেররিকাসহ অকেন দেশেই প্রচলিত ছিল। এভাবে শরীরে শাস্তি চিহৃ নিয়ে অপরাধীর পক্ষে ভাল কাজ করার মাসসিক অবস্থা, সৎভাবে জীবন যাপনের সম্বাবনা থাকে না এবং এ প্রথা অঙ্গচ্ছেদের সাথে তুলনীয় বিধায় সরকারিবাবে অনেক দেশেই এটা নিষিদ্ধ করা হেয়ছে।

৪) পিলোরী (Pillory): পিলোরী অর্থ কাস্ঠ নির্মিত দন্ডস্থম্ভ। যে ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হবে তাকে পিলোরী সাথে হাত ও মাথা ঢুকিয়ে রাখার ব্যবস্থা করা হত।

৫) সামাজিক মর্যাদাহানি (Social Defamation) : এটি একটি অপমান জনক শাস্ত্ িঅপমানজনক শাস্তির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে অপরাধীকে সমাজ হতে বিচ্ছিন্ন করা। পূর্বে অপরাধীকে সাময়িক বা স্থায়ী সামজিক মর্যাদাহানি ঘঠিয়ে তাকে অপদস্থ ও য়ে করা।ইত্যাদি আরো বিভিন্ন ধরনের শাস্তি রয়েছে। যাহ অপরাধের ধরনের উপর ভিত্তি করে প্রদান করা হয়ে থাকে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *